খুলনায় কমেছে পতিত জমিতে ফসল উৎপাদন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় বিভিন্ন সরকারি অফিস, শিল্পকারখানা, স্কুল-কলেজ ও আবাসিক এলাকায় ফসল উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়ার পর পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ বাড়লেও তা আবার কমে গেছে। পতিত এসব জমিতে ফসল উৎপাদনের উদ্যোগ ফের উজ্জীবিত করার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলনকারীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের শেষের দিকে খুলনার ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের পতিত জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে এখন তা সীমিত হয়ে পড়েছে। খুলনা জেলায় ২.৫ হেক্টর পতিত জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল-ফুল-ফল আবাদ হতো। যা কমে বর্তমানে ফসল উৎপাদন হচ্ছে ১.২ হেক্টর জমিতে। জেলা এবং উপজেলার প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ফসল উৎপাদনের কার্যক্রম এখন নেই বললেই চলে। অনেক প্রতিষ্ঠানের জমি ব্যবহারের প্রয়োজনিয়তা দেখা দেয়ায় আবাদ বন্ধ রয়েছে। তবে তেরোখাদায় দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমিতে ফুল উৎপাদন হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে খুলনা নির্বাচন কমিশন অফিস, মিতালি কলোনি, ডিআইজির বাংলো, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা টেক্সটাইল মিল, শিপইয়ার্ডসহ হাতে গোনা কিছু জায়গায় কৃষি অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে ফুল ও শাকসবজি উৎপাদন চলছে। তেরোখাদা, ডুমুরিয়া এবং বটিয়াঘাটা উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। আরও জানা যায়, ২০২২ সালে কৃষি অধিদফতরের সহযোগিতায় বিভিন্ন অফিস চত্বর এবং স্কুল কলেজের পতিত জমিতে ফসল উৎপাদন শুরু হয়। কিন্তু উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা এখন স্থবির হওয়ায় দৌলতপুর ও খালিশপুরের কয়েকটি বন্ধ জুটমিলের জমিতে ফসল উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। মিল চালুর জন্য সেসব জমি আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। পরিচর্যার অভাবে কিছু স্থানে ফুলের বাগানও নষ্ট হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের খুলনা শাখার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, সরকারি পতিত জমি ব্যবহারে আমাদের সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। পতিত জমিতে কিছু ফলানো গেলে আমাদের জন্যই উপকার। আমরা অক্সিজেন পাবো। এছাড়াও ফসল ফলানো গেলে দরিদ্র মানুষ উপকৃত হবে। পাশাপাশি জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে একটু হলেও পরিবেশ রক্ষা পাবে। তিনি আরও বলেন, শুধু উদ্যোগ গ্রহণ করলেই হবে না, কৃষি অধিদফতরের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভূমিকাও থাকতে হবে। তেরোখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিউলি মজুমদার বলেন, পতিত জমিতে ফসল কিংবা ফুল উৎপাদন করতে চাইলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করি। উপজেলায় এ পর্যন্ত দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এছাড়াও পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের বাগান করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আলাদাভাবে আমাদের এখন কোনো প্রকল্প নেই। তবে পতিত জমি ব্যবহার করে তা কাজে লাগানোর জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তিনি আরও বলেন, কেউ যদি স্কুল কলেজ, বাসা বাড়ির কিংবা অফিসের পতিত জমিতে চাষাবাদ করতে চায় তাকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সরকারি অফিস, শিল্পকারখানা, রাস্তার পাশ এবং স্কুল কলেজ চত্বরের পতিত জমি থাকলে সেখানে কৃষি জাতীয় ফসলের উৎপাদনমুখী কাজে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়। কোনো জটিলতা থাকলে তা নিরসন, চাষাবাদে সহযোগিতা এবং পরামর্শ প্রদান করা হয়। এছাড়াও পতিত জমি ব্যবহারে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

প্রকল্পের অভাবে স্থবির পতিত জমিতে ফসল উৎপাদন
- আপলোড সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ১১:৫৪:০৭ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ১১:৫৪:০৭ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ